প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে থাকা উচিত এই মহান বাক্যগুলো।ইসলামে দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শুধু মুখের কথা নয়, বরং আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একটি মাধ্যম। একজন মুমিন যখন বিপদে পড়ে কিংবা আনন্দের কোনো সংবাদ পায়, তখন তার প্রথম কাজ হওয়া উচিত আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া-তাঁর কাছে চাওয়া, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, স্মরণ করা। কেননা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
আল্লাহর কাছে চারটি বাক্য প্রিয়:
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার
— সহীহ মুসলিম
এই চারটি বাক্য শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, বরং এর প্রত্যেকটির রয়েছে গভীর অর্থ ও আত্মিক তাৎপর্য। আসুন একনজরে দেখে নিই:
১. সুবহানাল্লাহ (পরম পবিত্র আল্লাহ)
এর মানে হলো-আল্লাহ সব ধরনের ত্রুটি ও দুর্বলতা থেকে মুক্ত। এই বাক্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সৃষ্টিকর্তা মহান এবং কোনো কিছুই তাঁর তুলনায় নয়।
২. আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)
এই বাক্যটি শুধু একটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ভালো-মন্দ অবস্থাতেই আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট থাকার প্রতীক। একটি সুসংবাদ শুনলে বা পছন্দনীয় কিছু দেখলে আমরা বলি-“আলহামদুলিল্লাহ”।
৩. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই)
এই বাক্য ইসলামের মূল বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। এটি তাওহিদের ঘোষণা। আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ইবাদতের যোগ্য নয়-এই বিশ্বাস একজন মুসলমানকে সত্যিকার মুমিনে পরিণত করে।
৪. আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সর্বশক্তিমান)
এই বাক্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সব কিছুর ওপরে আল্লাহর শক্তি, কুদরত ও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোতে এটি সাহস ও ধৈর্যের উৎস হয়ে দাঁড়ায়।
ছোট বাক্য, বড় ফজিলত
এই চারটি বাক্য সংক্ষিপ্ত হলেও এর ফজিলত অনেক বড়। এগুলোর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করি, কৃতজ্ঞতা জানাই, ঈমান পুনর্ব্যক্ত করি এবং তাঁর সর্বশক্তিমান সত্তাকে স্বীকার করি।প্রতিদিনের জীবনে, বিশেষ করে ফজর ও মাগরিবের পর, কিংবা কাজের ফাঁকে-ফাঁকে এই চারটি বাক্য বারবার বললে আমাদের অন্তর পরিশুদ্ধ হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়।
শেষকথা:
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের স্মরণ করতে ভালোবাসেন। আর আমরা যদি এই প্রিয় চারটি বাক্য-সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার,অন্তরে ধারণ করে নিয়মিত পাঠ করি, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের জীবন হবে বরকতময়, শান্তিময় ও সফল।আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এসব মহান বাক্য হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তা বলার তাওফিক দেন। আমিন।