বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যগুলোর মধ্যে একটি হলো যুক্তরাষ্ট্র। ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা স্রেফ ভ্রমণ-বিভিন্ন কারণে লাখ লাখ মানুষ প্রতিবছর আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদন করেন। তবে এবার সেই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে এক নতুন চ্যালেঞ্জ: ১৫ হাজার ডলারের নিরাপত্তা বন্ড।
কী বলছে যুক্তরাষ্ট্র?
যুক্তরাষ্ট্র সরকার এক নতুন পাইলট প্রোগ্রাম চালুর পরিকল্পনা করছে, যেখানে নির্দিষ্ট কিছু দেশের ব্যবসা ও পর্যটন (B1/B2) ভিসার আবেদনকারীদের থেকে ১৫,০০০ ডলার পর্যন্ত বন্ড আদায় করা হতে পারে। বাংলাদেশসহ কিছু উন্নয়নশীল দেশ এই তালিকায় পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই বন্ড মূলত একটি নিরাপত্তা জামানত, যাতে ভিসা প্রাপ্ত ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কেউ যদি দেশটিতে অবস্থান করে, তবে ওই বন্ড বাজেয়াপ্ত করা হবে।
কেন এই উদ্যোগ?
- মূলত ওভারস্টে বা মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা বন্ধ করতেই এই কঠোর পরিকল্পনা।
- যুক্তরাষ্ট্রের মতে, অনেক দেশ থেকেই আসা ভ্রমণকারীরা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করে অবৈধ অভিবাসনে রূপান্তরিত হন।
- এই বন্ড ব্যবস্থার মাধ্যমে আবেদনকারীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
কাদের ওপর প্রভাব পড়বে?
- যেসব দেশের ভিসা ওভারস্টের হার বেশি, সেসব দেশের নাগরিকরা মূলত এই নিয়মের আওতায় পড়বেন।
- ব্যবসা বা চিকিৎসা কারণে ভিসা নিতে চাওয়া অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এই অতিরিক্ত ১৫ হাজার ডলার ভ্রমণকে প্রায় অসম্ভব করে তুলবে।
- শিক্ষার্থীরা যদিও এই নিয়মের বাইরে থাকতে পারেন, তবে পারিবারিক সফর বা স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসা ভিসার জন্য এটি বড় ধাক্কা।
বাংলাদেশিদের জন্য কী অর্থ বহন করে?
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করে।
এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে-
- সাধারণ পর্যটক বা আত্মীয়স্বজন দেখতে যাওয়া অনেকেই আবেদন করা থেকে বিরত থাকতে পারেন।
- যারা আবেদন করবেন, তাদের জন্য এটা হয়ে উঠবে অতিরিক্ত আর্থিক চাপের বোঝা।
- এই নীতি বাস্তবায়নে নিয়মিত ভিসা প্রত্যাখ্যান এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বাড়তে পারে।
ইতিবাচক দিক কী?
- যারা সত্যিই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরে আসবেন, তাদের জন্য এটি একটি ফেরতযোগ্য অর্থ হতে পারে।
- ভিসা ব্যবস্থায় নিয়ম-শৃঙ্খলা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরতে পারে।
শেষ কথা
ভিসা পাওয়া কখনোই সহজ ছিল না। তবে ১৫ হাজার ডলারের বন্ড অনেকের কাছে যেন একটি দেয়াল হয়ে দাঁড়াবে।
এই প্রস্তাব এখনও চূড়ান্ত নয়, তবে বাস্তবায়িত হলে ভ্রমণপ্রেমী এবং প্রয়োজনীয় ভ্রমণকারীদের জন্য এটি হবে এক কঠিন বাস্তবতা।