আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসছে রাশিয়া ও বেলারুশের সামরিক সহযোগিতা। আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বেলারুশের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী বহুল প্রতীক্ষিত সামরিক মহড়া ‘জাপাদ ২০২৫’। এই মহড়ায় অংশ নেবে দুই দেশের সেনাবাহিনী, যার মূল লক্ষ্য-আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের সক্ষমতা যাচাই ও কৌশলগত সামরিক প্রস্তুতি বৃদ্ধি।
মহড়ার মূল আকর্ষণ: ওরেশনিক হাইপারসনিক মিসাইল
এবারের মহড়ার সবচেয়ে বড় চমক হতে যাচ্ছে নবনির্মিত রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিক। এই মাঝারি পাল্লার হাইপারসনিক মিসাইল সম্পর্কে রাশিয়ার দাবি, এটি বিশ্বের একমাত্র অস্ত্র যা-
১.শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে
২.সর্বোচ্চ ৬টি ওয়ারহেডসহ পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম
৩.৩,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিনা বাধায় টার্গেট অতিক্রম করতে পারে
৪.রাশিয়ার মতে, এর গতিবেগ ও ধ্বংসক্ষমতার মিশ্রণ বর্তমানে অন্য কোনো দেশের কাছে নেই। এটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় অকার্যকর করে তুলতে সক্ষম।
পূর্ব অভিজ্ঞতা ও ব্যবহার
গত নভেম্বর মাসে ইউক্রেনে প্রথমবারের মতো এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওরেশনিক শুধু গতির দিক থেকেই নয়, নিখুঁত আঘাত হানার ক্ষেত্রেও অসাধারণ দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।
বেলারুশে মোতায়েনের পরিকল্পনা
রাশিয়া ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বেলারুশে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থায়ীভাবে মোতায়েন করা হবে। এর ফলে ন্যাটো ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কৌশলগত প্রভাব
ন্যাটো সীমান্তে চাপ বৃদ্ধি: বেলারুশে এই ধরনের অস্ত্র মোতায়েন ইউরোপের নিরাপত্তা ভারসাম্য পরিবর্তন করতে পারে।
রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক জোট আরও শক্তিশালী হবে।
পশ্চিমা দেশগুলোকে বাধ্য করবে নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল গ্রহণে।
শেষকথা –
‘জাপাদ ২০২৫’ শুধু একটি সাধারণ সামরিক মহড়া নয়-এটি ভূরাজনৈতিক ক্ষমতার একটি প্রদর্শনী, যেখানে হাইপারসনিক প্রযুক্তি ও পারমাণবিক সক্ষমতার মিশ্রণ দেখাবে রাশিয়া। ওরেশনিকের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে মহড়াটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নজরকাড়া করে তুলবে, এবং এর ফলশ্রুতিতে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন ধরনের উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।