বিশ্বজুড়ে মূল্যবোধের বিকৃতি, আর্ত মানবতার হাহাকার।এক টুকরো কলা মাত্র – দেয়ালে স্কচটেপ দিয়ে লাগানো! অথচ সেটির মূল্য ৬.২ মিলিয়ন ডলার! হ্যাঁ, এটা কোনো কল্পকাহিনি নয়, বরং এক শিল্পমেলায় বিক্রি হওয়া আসল আর্টওয়ার্কের মূল্য। এই দামে মজলুম, ক্ষুধার্ত, আশ্রয়হীন মানুষদের জন্য কতটা খাদ্য, আশ্রয় কিংবা শিক্ষা ব্যবস্থা করা যেত তা ভাবলেই বিবেক থমকে দাঁড়ায়।
শিল্পের নামে অমানবিকতা?
আধুনিক আর্টের ব্যাখ্যা জটিল হতে পারে, তবুও প্রশ্ন ওঠে – শিল্প কি কেবল ধনীদের বিলাসিতা? এক টুকরো কলা যদি মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়, তবে কেন কোটি কোটি মানুষের ক্ষুধা মেটাতে বিশ্ব অর্থনীতি ব্যর্থ?
মানবতার মূল্য এত কম?
একজন ক্ষুদার্ত শিশুর কান্না, একজন আশ্রয়হীনের শীতার্ত রাত, একজন নারীর খালি থালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা – এগুলো কি আজ মূল্যহীন হয়ে গেছে? বিশ্বব্যবস্থা ধনীদের জন্য আরামদায়ক হলেও দরিদ্র মানুষের বেঁচে থাকাও যেন অনাহুত বোঝা হয়ে গেছে।
দানের হাত গুটিয়ে নিচ্ছে বিশ্ব?
প্রতিবছর বিলিয়ন ডলার খরচ হয় বিলাসবহুল জিনিসে। অথচ জাতিসংঘের হিসাবে মাত্র ২৫ বিলিয়ন ডলার হলেই বিশ্বে অনাহার দূর করা সম্ভব! এমনকি ৬.২ মিলিয়ন ডলারেই কয়েক হাজার পরিবারের খাদ্য নিশ্চিত করা যায়।
আসল সমস্যা: হৃদয়ের দারিদ্র্য
দারিদ্র্য কেবল অর্থের নয়, হৃদয়েরও হতে পারে। যে সমাজ শিল্পের নামেই হোক, অযৌক্তিক কিছুতে কোটি টাকা ঢালতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবন রক্ষায় পিছিয়ে থাকে সে সমাজ আদতেই অসুস্থ।
পরিবর্তন কোথায়?
- সমাজে মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে
- দানের সংস্কৃতি আরও জোরদার করতে হবে
- শিল্প ও সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে
- মজলুমদের পাশে দাঁড়াতে হবে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে
শেষকথা:
এক টুকরো কলার দাম ৬.২ মিলিয়ন ডলার হলেও, এক টুকরো রুটি হয়ে দাঁড়ায় জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য-যদি সেটা পৌঁছে যায় ক্ষুধার্ত মুখে। মানবতা আর বৈষম্যের এই ব্যবধান ভাঙার সময় এখনই। আমরা যদি নিজেদের বিবেককে জাগাতে পারি, তবেই এই অন্যায় ভারসাম্য বদলানো সম্ভব।