সতর্কতা: এই ব্লগে দ্রুত ওজন কমানো নিয়ে কিছু তথ্য এবং পরামর্শের উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে কেবল চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলুন।
প্রি-ডায়াবেটিস-নামটি শুনে অনেকে হয়তো ভয় পেয়ে যান। তবে এটি আসলে ভয় নয়, বরং সতর্ক হওয়ার একটি সিগন্যাল। প্রি-ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে রক্তে গ্লুকোজের (চিনির) মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, কিন্তু সেটি এখনও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছেনি।
প্রি-ডায়াবেটিস মানে কি আমি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত?
না, কিন্তু আপনি ঝুঁকিতে আছেন। একে বলা যেতে পারে ডায়াবেটিসের ‘সতর্ক সংকেত’। যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাস্থ্য সংস্থা ‘ডায়াবেটিস ইউকে’-এর সিনিয়র ক্লিনিক্যাল অ্যাডভাইজার এস্থার ওয়ালডেন বলেন,
“জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে, বিশেষত খাদ্যাভ্যাসে বদল এনে আপনি শুধু টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধই করতে পারবেন না, প্রি-ডায়াবেটিস থেকেও পুরোপুরি মুক্তিও পেতে পারেন।”
প্রি-ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ কী?
প্রি-ডায়াবেটিসে অনেক সময় তেমন কোনো সুস্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না। তবে কিছু বিষয় সতর্ক সংকেত হতে পারে:
১.অতিরিক্ত তৃষ্ণা লাগা
২.ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৩.হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া
৪.অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা
৫.ধীরে ক্ষত সারা
৬.ধূসর বা কালচে ত্বকের কিছু অংশ (গলা, বগল বা কনুইয়ের পাশে)
কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়?
একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রি-ডায়াবেটিস শনাক্ত করা সম্ভব। সাধারণত “ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্ট” বা “এইচবিএ১সি টেস্ট” এর মাধ্যমে এটি নির্ধারণ করা হয়।
কীভাবে প্রি-ডায়াবেটিস মোকাবিলা করা যায়?
ভয়ের কিছু নেই-জীবনযাপনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনই পারে আপনাকে সুস্থ রাখার পথে ফিরিয়ে দিতে:
১. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
শর্করাযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে দিন
আঁশযুক্ত খাবার যেমন ডাল, সবজি ও ফলমূল খেতে থাকুন
সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস বা ওটস খাওয়ার চেষ্টা করুন
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা এক্সারসাইজ করুন
হাঁটার সুযোগ পেলে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যদি আপনি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় ভুগে থাকেন, তবে ওজন কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
৪. ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক
শেষ কথা:
প্রি-ডায়াবেটিস কোনো রোগ নয়, বরং আপনার শরীরের একটি সতর্কবার্তা। সঠিক সময়ে জীবনধারায় পরিবর্তন আনলে, আপনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারেন এবং সুস্থ জীবনযাত্রা বজায় রাখতে পারেন। নিয়মিত চেকআপ, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং দৈহিক সচেতনতাই এই যাত্রার মূল চাবিকাঠি।
নির্দেশনা: এই ব্লগে দেয়া প্রতিটি পরামর্শ কেবল সাধারণ স্বাস্থ্যসচেতনতার জন্য। নিজের অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত নয়।