প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপের সঙ্গে যেমন বাণিজ্যে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন, চীনের সঙ্গে তেমনটা করতে যাচ্ছেন না।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন হোয়াইট হাউসের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামোতে সম্মত হওয়ার দুই দিন পর — যা ইউরোপের কিছু নেতার কাছে আত্মসমর্পণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে — ট্রাম্পের আলোচকরা সুইডেনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দলের সঙ্গে বৈঠক শেষ করেও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আনতে পারেননি।
প্রশাসনের একের পর এক ঘোষিত বাণিজ্য চুক্তির পরও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চলতেই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু বড় কোনো অগ্রগতি না হওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, চীনের শক্তি কতটা, ট্রাম্পকে প্রতিরোধ করতে তারা কতটা আগ্রহী এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে চুক্তি ছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোকে নতুনভাবে সাজানো অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।
আরেকটি জয়লাভের বদলে, ট্রাম্পের আলোচকরা বুধবার তার কাছে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন — আগস্ট ১২ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকা পারস্পরিক শুল্ক বৃদ্ধির স্থগিতাদেশ বাড়ানোর প্রস্তাব। প্রেসিডেন্টের সামনে দুটি পথ — হয় আলোচনার জন্য আরও সময় দেওয়া, যা বেইজিংয়ের পক্ষে যাবে, অথবা একটি বড় ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধের ঝুঁকি নেওয়া।
আসলে এটি কোনো সত্যিকারের বিকল্পই নয়। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট, যিনি ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে স্টকহোমে মার্কিন দলের নেতৃত্ব দেন, মঙ্গলবার সিএনবিসিকে বলেন, “আমরা শুধু তাকে বাস্তব তথ্য দেব, এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।”
কেউ অস্বীকার করছে না যে ট্রাম্প বাণিজ্যে জয়ের ধারায় আছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একপেশে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিজয় অর্জন করেছেন।
ট্রাম্পের ধারণা ছিল, অন্যান্য দেশ ও বাণিজ্য ব্লকগুলো আমেরিকান বাজারে প্রবেশের জন্য বেশি মূল্য দিতে বাধ্য হবে — এবং এটি সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। এসব চুক্তির মাধ্যমে তিনি আমেরিকান উৎপাদকদের জন্য কিছু আগে বন্ধ বাজারও উন্মুক্ত করতে পেরেছেন।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপীয়দের আমেরিকার শক্তির উপর ভর করে বিনা খরচে সুবিধা নেওয়া বলেই মনে করেছেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন — ট্রান্সঅটলান্টিক সম্পর্ককে নতুনভাবে সাজিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানির উপর ১৫% শুল্ক আরোপ করেছেন এবং ন্যাটো সদস্যদের ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে বাধ্য করেছেন। নিরাপত্তার জন্য মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রের উপর এতটাই নির্ভরশীল যে বাণিজ্যে তারা সহজেই মাথা নত করবে — ট্রাম্পের এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক প্রমাণিত হয়েছে