নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক এক প্রস্তাবে বাগেরহাট জেলার বর্তমান চারটি সংসদীয় আসনের সংখ্যা কমিয়ে তিনটি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের নাগরিক। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাগেরহাট শহরে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন ও সাধারণ নাগরিকরা। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। বক্তারা এই প্রস্তাবকে ‘অবিচার’, ‘প্রশাসনিক অসতর্কতা’ এবং ‘জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে আখ্যায়িত করেন।
বিক্ষোভে বক্তাদের দাবিগুলো ছিল:
- বাগেরহাট জেলার চারটি আসন অব্যাহত রাখতে হবে
- জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বাস্তবতা বিবেচনায় সীমানা নির্ধারণ করতে হবে
- রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে
- গণশুনানি ও জনপ্রতিনিধিদের মতামত নেওয়ার দাবি
- সীমানা পুনর্নির্ধারণের নামে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ উপেক্ষা করা চলবে না
- অবিলম্বে এই প্রস্তাব বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
- স্থানীয়রা বলছেন, বাগেরহাটের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বৃহৎ ভূখণ্ড বিবেচনায় নিলে চারটি আসন কমানো যুক্তিসংগত নয়। বরং সেবাপ্রাপ্তির অসুবিধা ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব হ্রাস পাবে।
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান
ইসি সূত্র জানিয়েছে, আসন পুনর্বিন্যাস প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত নয়। এটি এখনো খসড়া পর্যায়ে রয়েছে এবং জনগণের মতামত নেওয়ার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে প্রাথমিক এই ঘোষণায় ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি না মানা হলে তারা জেলার প্রতিটি উপজেলায় গণসংযোগ, মানববন্ধন ও আরও বৃহৎ কর্মসূচি দেবেন। এতে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও যুক্ত হবে বলে জানান তারা।
শেষকথা:
জনগণের মতামত, স্থানীয় বাস্তবতা এবং সাংবিধানিক ন্যায্যতার আলোকে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। বাগেরহাটে আসনসংখ্যা কমানোর বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক বিষয় নয়-এটি জনসেবার, প্রশাসনিক সক্ষমতার এবং গণতন্ত্রের সঠিক চর্চার প্রশ্ন।