এইমাত্র

আরও খবর

আলফ্রেড হিচককের The Birds শুধু একটি ন্যাচারাল হরর থ্রিলার নয়, বরং সামাজিক রুপক, জেন্ডার ডায়নামিক্স ও মানুষের মনস্তত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণ। ড্যাফনি ডু মরিয়েরের ১৯৫২ সালের গল্প অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলীয় শহর বোডেগা বেকে ঘিরে, যেখানে হঠাৎ করেই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আক্রমণ করতে শুরু করে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো-এই আক্রমণের কোনো সরাসরি কারণ হিচকক চলচ্চিত্রে জানাননি। শিরোনামের দ্বৈত অর্থ “Birds” একদিকে আক্রমণকারী পাখিদের বোঝায়, অন্যদিকে ইংরেজি স্ল্যাং-এ এটি নারীদের প্রতীক। ছবিতে দেখা যায়, মিচের জীবনে একাধিক নারীর উপস্থিতি-যার মধ্যে মেলানি ড্যানিয়েলস, তার প্রাক্তন প্রেমিকা অ্যানি, এমনকি তার মা পর্যন্ত রয়েছেন। এই নারীদের পারস্পরিক ঈর্ষা, দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার লড়াই Hitchcock পাখির আক্রমণের সাথে সমান্তরালে ফুটিয়ে তুলেছেন। মেলানি ড্যানিয়েলস - স্বাধীনচেতা নারীর প্রতীক মেলানি জনপ্রিয়, আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীনচেতা-যে কারণে ছোট্ট শহরের নারীরা তাকে সন্দেহ ও বিরূপ দৃষ্টিতে দেখে। তার আগমনের পর থেকেই পাখিদের আক্রমণ শুরু হয়, যেন তার উপস্থিতিই শহরের সামাজিক ভারসাম্যের জন্য হুমকি। মিচের সাথে পুনরায় দেখা করার মুহূর্তে তার মাথায় সীগালের আঘাত, অথবা জন্মদিনের পার্টির পর অ্যানির মৃত্যু-সবকিছুই প্রতীকীভাবে নারী-নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সমাজের নারীবিদ্বেষী দৃষ্টিভঙ্গিকে ইঙ্গিত করে। রুপকের ব্যবহার পুরো সিনেমা জুড়ে পাখিদের আক্রমণ সমাজের এক অব্যক্ত ভয় ও দমনকে প্রতিফলিত করে। হিচকক দেখিয়েছেন-একজন আত্মপ্রত্যয়ী নারী ছোট্ট, রক্ষণশীল সমাজে এলে কীভাবে তা উত্তেজনা, বিভাজন ও আতঙ্ক তৈরি করতে পারে। পাখিরা যেন সমাজের সেই অদৃশ্য শত্রুতা ও আক্রোশের প্রতীক, যা ধীরে ধীরে বিস্ফোরিত হয়। শেষকথা- The Birds শুধুমাত্র ভৌতিক অভিজ্ঞতা নয়-এটি স্বাধীনচেতা নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক মনোভাবের প্রতিচ্ছবি। হিচককের এই মাস্টারপিস দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে, আসল আতঙ্ক কি পাখিদের আক্রমণ, নাকি সমাজের লুকানো বৈরিতা।
দ্য বার্ডস (১৯৬৩) : হিচককের রুপকধর্মী হরর ও সামাজিক সমালোচনা
13-Aug-blog-image-05
প্রকাশ পেল ‘জলি এলএলবি ৩’ টিজার: আদালতে দুই জলির জমজমাট কমেডি যুদ্ধ
10-Aug-blog--image-05
২০২৫ সালের সেরা ৫ বাংলা মুভি রিভিউ 
09-Aug-blog--image-05
ঈদে শাকিব খানের নতুন ছবির সাউন্ড ডিজাইনে থাকছেন আরাফাত মহসীন নিধি
07-Aug-blog--image-04
ইয়াশ রোহান ও নীহার “উইশ কার্ড”: জাকারিয়া সৌখিনের রোমান্টিক কমেডি নাটক

আবারও বাংলাদেশের ইংলিশ চ্যানেল জয়: নাজমুল হক হিমেলের দুর্দান্ত সাফল্য

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আবারও গর্বের মুহূর্ত, ৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল জয় করলেন কিশোরগঞ্জের সাহসী সাঁতারু নাজমুল হক হিমেল। ২০২৫ সালের ৪ আগস্ট তারিখটি বাংলাদেশের ক্রীড়াতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

কী এই ইংলিশ চ্যানেল?

ইংলিশ চ্যানেল হলো ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মাঝে অবস্থিত একটি বিখ্যাত জলপথ, যেটিকে বিশ্বের অন্যতম কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ জলসাঁতারের রুট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাঁতারুদের জন্য এটি শুধুই এক প্রতিযোগিতা নয়, বরং এক অসাধারণ মানসিক ও শারীরিক পরীক্ষার নাম।

নাজমুল হক হিমেলের কৃতিত্ব

নাজমুল হক হিমেল এই চ্যালেঞ্জিং চ্যানেল পার হয়েছেন ৩৭ বছর পর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়। তাঁর এই সাফল্য শুধু ব্যক্তি বিজয় নয়, বরং সমগ্র জাতির অনুপ্রেরণা।

গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:

  1. চরম ঠান্ডা পানি
  2. ঢেউ, জোয়ার-ভাটা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া
  3. দীর্ঘ সময় ধরে একটানা সাঁতার
  4. মনোবল, ধৈর্য ও শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা

সব বাধা পেরিয়ে হিমেল প্রমাণ করেছেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়।

৩৭ বছরের ব্যবধান

বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ কোনো সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন ১৯৮৮ সালে। দীর্ঘ সময় পর এই কীর্তি নতুন করে প্রাণ দিয়েছে দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে, বিশেষ করে সাঁতারুদের মাঝে।

দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে সম্ভাবনার বার্তা

নাজমুল হক হিমেলের এই সাফল্য কেবল এক ব্যক্তির অর্জন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক দিকনির্দেশনা। দেশের তরুণ সাঁতারুদের জন্য এটি হতে পারে এক বিশাল অনুপ্রেরণা। সরকার ও ক্রীড়া সংগঠনগুলো যদি এ ধরনের আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণে আরও উৎসাহ দেয়, তাহলে বাংলাদেশ আরও বড় সাফল্য পেতে পারে।

শেষ কথা

নাজমুল হক হিমেলের সাহস, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে, স্বপ্ন দেখার সাহস যারা রাখে, তারাই ইতিহাস গড়ে। বাংলাদেশ আজ গর্বিত, কারণ তারই এক সন্তান জয় করেছে বিশ্বের সবচেয়ে কষ্টসাধ্য জলপথ-ইংলিশ চ্যানেল।

অভিনন্দন নাজমুল হক হিমেল! তোমার সাফল্যে পুরো জাতি আজ গর্বিত।

সর্বাধিক পঠিত