বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষা খাতে বড় এক অগ্রগতির পথে পা রাখল দেশ। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) এবং বাংলাদেশ সরকার ১৫ কোটি মার্কিন ডলারের একটি ঋণ চুক্তিতে সই করেছে। এই অর্থ দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (TVET) খাতে ব্যবহার করা হবে।
চুক্তির মূল লক্ষ্য কী?
এই ঋণ চুক্তির মাধ্যমে সরকার এবং ADB যে লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে চায়, তা হলো:
১.শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
২. আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক দক্ষ জনবল গড়ে তোলা
৩. কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো
৪. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করা
৫. নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
কেন TVET খাত গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমান বিশ্বে শুধুমাত্র সার্টিফিকেটধারী নয়, দক্ষ কর্মীই বড় চাহিদার জায়গা দখল করে নিচ্ছে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে TVET খাত দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। একজন দক্ষ কারিগরি কর্মী শুধু দেশের বাজারেই নয়, বৈশ্বিক বাজারেও কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।
ADB-এর সহায়তা তাই এই খাতকে আরও যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে সহায়ক হবে।
কীভাবে এই অর্থ ব্যবহৃত হবে?
এই ঋণ প্রকল্পের আওতায়:
- সরকারি ও বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আধুনিকায়ন
- ইনস্ট্রাক্টর ও প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ
- ইন্ডাস্ট্রি লিংকেজ প্রোগ্রাম চালু
- দক্ষতা মূল্যায়ন ও সার্টিফিকেশন পদ্ধতি উন্নয়ন
- নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ ও সহায়তা
সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি
সরকার আশা করছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও যুবশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রতি তরুণদের আগ্রহও বাড়বে।
ADB-এর অবস্থান
ADB দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতে অবদান রাখছে। TVET উন্নয়নে এই ঋণ ADB-এর “Inclusive and Sustainable Growth” নীতিরই অংশ।
শেষকথা:
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ অপরিহার্য। এডিবি ও বাংলাদেশের এই যৌথ উদ্যোগ সেই মানবসম্পদ উন্নয়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।সঠিকভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তৈরি হবে আরও সক্ষম, দক্ষ ও কর্মসংস্থানের উপযোগী সমাজ।
আশা করি, এ ধরনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নে আরও গতিশীলতা আনবে।