এইমাত্র

আরও খবর

17-Aug-blog-image-02
উপকারী ফল আনারসের পাঁচটি সতর্কতা
আলু অঙ্কুরিত হলে,খাওয়া যাবে নাকি ফেলতে হবে?
আলু অঙ্কুরিত হলে,খাওয়া যাবে নাকি ফেলতে হবে?
blog-30-July-05
প্রি-ডায়াবেটিস কী? এর মোকাবিলা করা কিভাবে সম্ভব?
blog-30-July-01
গর্ভাবস্থায় প্রেসার কেমন থাকা উচিত জেনে নিন

ব্রেনের ১২টা বাজাচ্ছেন নাকি? মস্তিষ্কের ক্ষতিকর ১১টি অভ্যাস এবং তা থেকে মুক্তির উপায়

সারাদিন অন্ধকার ঘরে বসে থাকা, হেডফোনে জোরে গান শোনা বা একা সময় কাটানো এখন অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাস। কিন্তু জানেন কি, এভাবেই আপনি ধীরে ধীরে নিজের মস্তিষ্ককে ধ্বংস করে ফেলছেন?

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারস অ্যান্ড স্ট্রোকসহ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু সাধারণ অভ্যাস আমাদের ব্রেনের কার্যক্ষমতা ধ্বংস করছে।

এই ব্লগে জানুন এমন ১১টি অভ্যাস, যেগুলো আপনার মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, আর জানুন মুক্তির উপায়।

মস্তিষ্কের ক্ষতিকারক ১১টি অভ্যাস

১. অন্ধকার ঘরে দীর্ঘ সময় থাকা

ক্ষতি: পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পেলে মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোন ব্যাহত হয়, যা মন-মেজাজ ও ব্রেন ফাংশনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

উপায়: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট প্রাকৃতিক আলোতে থাকুন।

২. হেডফোনে উচ্চ ভলিউমে গান শোনা

ক্ষতি: শ্রবণশক্তি নষ্টের পাশাপাশি মস্তিষ্কে অতিরিক্ত উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা স্মৃতি দুর্বল করতে পারে।

উপায়: ভলিউম ৬০%-এর নিচে রাখুন এবং একটানা ১ ঘণ্টার বেশি না শুনুন।

৩. কম ঘুমানো বা অনিদ্রা

ক্ষতি: ব্রেনের নিউরাল কানেকশন দুর্বল হয়, স্মৃতি শক্তি কমে যায়।

উপায়: প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

৪. সকালে না খাওয়া

ক্ষতি: মস্তিষ্কে গ্লুকোজ সরবরাহ কমে যায়, মনোযোগ ও বুদ্ধি কমে।

উপায়: প্রোটিন ও কার্বো হালকা-সুস্থ একটি সকালের নাস্তা করুন।

৫. দীর্ঘ সময় একা থাকা

ক্ষতি: স্যোশ্যাল আইসোলেশন মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা বাড়ায়, যা ব্রেন অ্যাট্রোফির কারণ হতে পারে।

উপায়: প্রতিদিন অন্তত একজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান।

৬. একটানা বসে থাকা

ক্ষতি: রক্তসঞ্চালন কমে যায়, ফলে ব্রেন অক্সিজেন কম পায়।

উপায়: প্রতি ৩০ মিনিট পরপর উঠে হেঁটে আসুন।

৭. অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার

ক্ষতি: দীর্ঘমেয়াদে নিউরোনাল সেল ক্ষতি হয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা হয়।

উপায়: চিনির পরিমাণ কমান, প্রাকৃতিক উৎসে ভরসা রাখুন (মধু, ফল)।

৮. তথ্য-অতিরিক্ততা (Information Overload)

ক্ষতি: অনেক বেশি ইনপুট ব্রেনকে ক্লান্ত করে, ফোকাস নষ্ট হয়।

উপায়: নির্দিষ্ট সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন, ডোপামিন ডিটক্স করুন।

৯. এক্সারসাইজ না করা

ক্ষতি: ব্রেন নিউরোজেনেসিস বন্ধ হয়ে যায়, মানসিক দক্ষতা কমে।

উপায়: সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ৩০ মিনিট হাঁটা/দৌড়ান।

১০. ধূমপান ও অ্যালকোহল

ক্ষতি: ব্রেন কোষে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়, স্মৃতিভ্রষ্টতা দেখা দিতে পারে।

উপায়: ধূমপান ছাড়ুন, অ্যালকোহল বর্জন করুন।

১১. স্ট্রেস বা মানসিক চাপকে অবহেলা করা

ক্ষতি: কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে ব্রেনের হিপোক্যাম্পাস ক্ষতিগ্রস্ত করে।

উপায়: মেডিটেশন, রিলাক্সিং মিউজিক ও নেগেটিভ চিন্তা দূর করুন।

 

কীভাবে ব্রেনকে আবার সুস্থ করবেন?

  • সূর্য ও প্রকৃতির কাছাকাছি থাকুন
  • নিয়মিত ঘুম ও ব্যায়াম করুন
  • সম্পর্কগুলো সময় দিন
  • প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন (ভাষা, বই, স্কিল)
  • হাসুন, গান শুনুন, খেলাধুলা করুন
  • সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমান
  • দুশ্চিন্তা নিয়ে কথা বলুন, চেপে রাখবেন না

শেষকথা:

আমরা নিজেরাই নিজেদের ব্রেন ধ্বংস করছি।দিনের পর দিন সেই কাজগুলো করেই যা স্নায়ুকে ক্ষয় করছে, মনকে ক্লান্ত করছে, স্মৃতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এখন সময় এসেছে সচেতন হওয়ার, নিজেকে বদলানোর। কারণ একটাই মস্তিষ্ক, একটাই জীবন।

 

সর্বাধিক পঠিত