মৌলভীবাজারে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’। ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় স্মরণে, প্রতি বছরের মতো এবারও ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকালে দিবসটির নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি
সকাল ৯টায় মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি। জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মঞ্চজুড়ে ছিল জাতির জন্য আত্মদানকারী সাহসী শহীদদের স্মৃতিচারণ।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে স্থানীয় প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। বক্তারা ১৯৭৪ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারে সংগঠিত গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন। সেই সময়ের রাজনৈতিক পটভূমি, জনতার ক্ষোভ ও সাহসিকতার বিবরণ উঠে আসে বক্তৃতায়।
আলোচনা সভার পরপরই ছিল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় শিল্পীরা গণসঙ্গীত, আবৃত্তি ও নাটকের মাধ্যমে জনতার সংগ্রাম ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ফুটিয়ে তোলেন। এতে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বিপুলসংখ্যক তরুণ ও শিক্ষার্থী, যারা বাংলাদেশের ইতিহাস জানার আগ্রহে অংশ নেয় এ আয়োজনে। তারা মনে করেন, এমন কর্মসূচি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস জানাতে সহায়ক, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সচেতন করতে কার্যকর।
ইতিহাসের পুনরুদ্ধার
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান মৌলভীবাজারবাসীর সাহসী পদক্ষেপের প্রতীক, যা স্থানীয় আন্দোলন হলেও দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার ধারক। এ দিবসের যথাযথ পালন ইতিহাসের স্মারক হিসেবে কাজ করে, যা মানুষকে প্রতিবাদী, সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তোলে।
উপসংহার:
মৌলভীবাজারে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ পালনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হয়েছে, অতীতকে সম্মান করেই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যায় জাতি। এই দিনটি শুধু স্মরণ নয়, বরং শিক্ষা গ্রহণ ও আন্দোলনের প্রেরণাও হয়ে উঠেছে।