মানুষের স্বভাবেই আছে সঞ্চয়ের প্রবণতা। সুন্দর বাড়ি, জমি-জমা, সোনা-রুপার গয়না, ব্যাংকে টাকাপয়সা,এসব অর্জনের জন্য মানুষ সারাজীবন পরিশ্রম করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো-এই সঞ্চিত সম্পদ কি আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্য, অর্থাৎ আখেরাতে, কোনো উপকারে আসবে?
কোরআনের দৃষ্টিতে দুনিয়ার সম্পদ
মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ তাআলা মানুষের মনের এই আকর্ষণকে চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছেন:
“সুশোভিত করা হয়েছে মানবজাতির জন্য নারী, সন্তান-সন্ততি, সঞ্চিত স্বর্ণ ও রৌপ্যভাণ্ডার, প্রশিক্ষিত ঘোড়া, পালিত পশু এবং শস্যক্ষেতের প্রতি ভালোবাসা ও আকর্ষণকে। এটা পার্থিব জীবনের সম্পদ এবং আল্লাহর কাছে রয়েছে শ্রেষ্ঠতম অবস্থান।” (সূরা আলে ইমরান: ১৪)
এ আয়াত আমাদের মনে করিয়ে দেয়-দুনিয়ার এসব সম্পদ আল্লাহর এক পরীক্ষার অংশ। এগুলো মন্দ নয়, তবে এগুলোর প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি আমাদের আখেরাতের কথা ভুলিয়ে দিতে পারে।
সম্পদের প্রকৃত মূল্য
দুনিয়ার সম্পদ কেবল তখনই মূল্যবান, যখন তা হালাল উপায়ে উপার্জিত হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করা হয়।
সদকা ও দান: আখেরাতে যার স্থায়ী সুফল পাওয়া যাবে।
পরিবারের হক আদায়: ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের প্রাপ্য দেওয়া।
জনসেবামূলক কাজে ব্যয়: জ্ঞান, স্বাস্থ্য, মানবকল্যাণে বিনিয়োগ করা।
কেন দুনিয়ার সম্পদ আখেরাতে যাবে না
মৃত্যু সবকিছু ছিন্ন করে দেয়-শুধু আমলই সঙ্গে থাকে।
কবরের প্রশ্নোত্তরে সম্পদের হিসাব নেওয়া হবে, সম্পদ নিজে নয়।
সম্পদ যদি অহংকার, লোভ ও গুনাহের পথে ঠেলে দেয়, তবে তা আখেরাতে শাস্তির কারণ হতে পারে।
দুনিয়া ও আখেরাতের ভারসাম্য
ইসলাম আমাদের শেখায়-দুনিয়ার কাজ করো আখেরাতের কথা মাথায় রেখে।
পরিশ্রম করো, তবে আল্লাহর অবাধ্য হয়ে নয়।
ভোগ করো, তবে অপচয় করে নয়।
সঞ্চয় করো, তবে জাকাত ও দান থেকে বিরত থেকে নয়।
শেষকথা :
দুনিয়ার সঞ্চিত সম্পদ আখেরাতে সরাসরি কোনো কাজে লাগবে না, তবে তা সঠিক পথে ব্যবহার করলে আখেরাতের পুঁজি হয়ে উঠতে পারে। তাই সম্পদের পিছনে অন্ধভাবে না ছুটে, সেটিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগানোই হলো সত্যিকারের সাফল্য।