কানাডার জাতীয় বিমান সংস্থা এয়ার কানাডা আকস্মিকভাবে তাদের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, যখন বেতন-ভাতা নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় ১০ হাজারেরও বেশি কেবিন ক্রু ধর্মঘটে যান। এতে গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের ব্যস্ত মৌসুমে বিশ্বজুড়ে হাজারো যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। খবর – সিএনএন।
কেন এই ধর্মঘট?
এয়ার কানাডার কেবিন ক্রুরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি, কর্মপরিবেশের উন্নতি ও কাজের সময়সীমা হ্রাস নিয়ে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের মধ্যে বারবার আলোচনার পরও কোনো সমাধান হয়নি। অবশেষে শুক্রবার রাত (১৫ আগস্ট) ব্যর্থ আলোচনার পর কেবিন ক্রুরা সর্বাত্মক ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
কানাডার শ্রমমন্ত্রী প্যাটি হাইডু উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন-
“এত অল্প অগ্রগতি গ্রহণযোগ্য নয়। কানাডিয়ানরা উভয় পক্ষের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা আশা করছে।”
কত বড় ক্ষতি হচ্ছে?
প্রতিদিন প্রায় ৭০০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে এয়ার কানাডা।
এর ফলে দৈনিক প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তাদের মধ্যে অন্তত ২৫ হাজার কানাডিয়ান বিদেশে আটকে পড়তে পারেন।
এই স্থগিতাদেশ শুধু যাত্রী নয়, পর্যটন শিল্প ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগ
মন্ট্রিয়লের যাত্রী অ্যালেক্স লারোশ জানান, তিনি ও তার বান্ধবী কয়েক মাস ধরে সঞ্চয় করে ইউরোপ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে তাদের ৮ হাজার ডলারের অগ্রিম বুকিং এখন ঝুঁকিতে পড়েছে।
তিনি হতাশ হয়ে বলেন-
“এখন শুধু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।”
সামনে কী হতে পারে?
যতদিন না উভয় পক্ষ বেতন-ভাতা নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাচ্ছে, ততদিন ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে হাজারো যাত্রী অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। সরকার পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছে, তবে সমাধান আসতে আরও সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শেষকথা –
এয়ার কানাডার এই ধর্মঘট শুধু একটি দেশের নয়, বরং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ব্যবস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে। যাত্রীদের ক্ষতি, আর্থিক লোকসান এবং পর্যটন শিল্পের ক্ষতিপূরণ করতে সময় লাগবে। এখন সবার নজর শ্রম মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতা ও এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের দিকে।