২১ জুলাই ২০২৫।
তারিখটি যেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জীবনে এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি হয়ে থাকবে। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মুহূর্তেই পাল্টে যায় অনেকের জীবন। আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় স্বপ্ন, থেমে যায় শিশুর হেসে ওঠা, থেমে যায় একেকটা পরিবার।
এই দুর্ঘটনায় যেসব শিক্ষার্থী ও আশেপাশের মানুষ আহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। এখনো পর্যন্ত সেখানে ৩৬ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের অনেকেই তীব্র ব্যথায় কাতরাচ্ছেন।
সংকটাপন্ন চারজন, লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে
দগ্ধদের মধ্যে চারজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাদের স্থান দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সেখানে তাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। প্রত্যেকটি মুহূর্ত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে এক অসম যুদ্ধ।
দগ্ধ কেবল শরীর নয়, দগ্ধ মন ও পরিবারও
এই চিকিৎসা কেবল শরীরের নয়, মানসিক ট্রমাও ভয়ানক। অল্প বয়সী শিশুদের সামনে থেকে তাদের বন্ধু, সহপাঠী, এমনকি নিজেকে আগুনে পোড়তে দেখা,এই ক্ষত সারাজীবনের। একজন মায়ের আর্তনাদ”আমার ছেলেটা আগের মতো হাসবে তো?”এই এক বাক্যেই ফুটে উঠে দুর্ঘটনার গভীরতা।
সহমর্মিতা ও সহায়তার সময় এখন
এই দুর্ঘটনার শিকার প্রত্যেকটি মানুষ আমাদের কারও না কারও ভাই, বোন, সন্তান। এখন সময় তাদের পাশে দাঁড়ানোর। ব্যক্তিগত উদ্যোগ হোক বা প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা,প্রত্যেকটিই হতে পারে কারো জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার হাতিয়ার।
শেষকথা:
উত্তরার সেই ট্র্যাজেডি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়,এটি গোটা জাতির জন্য একটি সতর্কবার্তা। নিরাপত্তা, মানবিকতা এবং দায়িত্বশীলতার প্রশ্নে যেন আমরা আর গাফিলতি না করি।জীবন ফিরে পাওয়া যাক, কিন্তু তার জন্য চাই সদিচ্ছা, সহমর্মিতা, আর সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত।